স্টাফ রিপোর্টার :
হিজড়াদের (তৃতীয় লিঙ্গ) অত্যাচারে অতিষ্ঠ কুমিল্লাবাসী। বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে আরো হিংস্র হয়ে উঠছে কুমিল্লার হিজরাদের দল। এবার কুমিল্লা প্রেসক্লারে দ্বিতীয় তলায় প্রেসক্লাব কমিউনিটি সেন্টারে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে হিজরাদের চাহিদা মতো ১০ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় বর ও কনের স্বজনদের উপর হামলা করে হিজরার দল। ভাংচুর করে কমিউনিটি সেন্টারের চেয়ার টেবিল। পুরো ঘটনা কমিউনিটি সেন্টারের সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।
শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুর ২টার দিকে হিজরাদের এমন তান্ডবে হতভম্ব হয়ে পরে বিয়ের আয়োজক বর ও কনের পক্ষ। হিজরাদের দাবিকৃত ১০ হাজার টাকা দিতে এক পর্যায়ে গায়ের জামা কাপর খুলে অশ্লিল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে হিজরারা, নাদিরা হিজরা ও রাবিনা হিজরার নেতৃত্বে হিজরারা অশ্লিল ভাষায় সকলকে গালিগালাজ করতে থাকে, এক পর্যায়ে শরীর থেকে জামা-কাপড় খুলে অশোভন আচরণ করতে থাকে এবং নানা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। সকলের সামনে লাফাতে থাকে। একসাথে সকল হিজরারা বিয়ের অতিথিদের মুখের সামনে গিয়ে জোরে জোরে হাততালি দিতে থাকে।
বিয়ের আয়োজক কুমিল্লা কোতয়ালী থানা সংলগ্ন চানপুরের ফারুক আহাম্মেদ কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় ফোন দিলে কুমিল্লা কোতয়ালী থানা থেকে এস আই সহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স এসে হিজরাদের হাত থেকে বিয়ের আয়োজকদের রক্ষা করে।
দুপুর ২টার দিকে প্রথমে রাবিনা হিজরার নেতৃত্বে একদল এসে অত্যাচার করতে থাকে, এক হাজার টাকার বেশি দিতে পারবেনা বললে শুরু হয় অত্যাচার, ওই হিজরারা ফোন দিয়ে আরেক গ্রুপকে নিয়ে আসে, তাদের ফোনে নাদিয়া হিজরার নেতৃত্বে আসে আরো ১০ থেকে ১২ জন হিজরার দল, তারাও এসে টাকা দাবি করলে বর ও কনে পক্ষ এবং কমিউনিটি সেন্টারের কর্মচারিরা এক জোট হয়ে প্রতিরোধ করলে কিছুক্ষনের মধ্যে সরে পরে হিজরারা।
ঘটনার সময়ে কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক জেড এম মিজানুর রহমানকে জানালে তিনি জানান, কুমিল্লার হিজরারা নিয়ন্ত্রনে নেই।
কমিউনিটি সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন জাকির জানান, হিজরারা প্রতিটি অনুষ্ঠানে এসে টাকা নেয়, প্রতিটি বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজকদের বলা থাকে হিজরারা আসলে এক থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে দিতে। কিন্তু হিজরারা ১০/১২ হাজার টাকা দাবি করে, না দিলে অত্যাচার শুরু করে, হিজরাদের বিষয়ে কুমিল্লা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
কুমিল্লায় সম্প্রতি বিয়ে বাড়ি, কমিউনিটি সেন্টার, রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট, যেখানে সেখানে টাকার জন্য মানুষকে নাজেহাল করছে তারা। রীতিমতো সন্ত্রাসী কায়দায় রাস্তায় বর-কনের গাড়ি আটকে আদায় করে চাঁদা। সন্তান জন্ম নিলে বাড়িতে গিয়েও অত্যাচার শুরু করে।
কমিউনিটি সেন্টার গুলোতে শত-শত অতিথির সামনে অত্যাচার করতে থাকে, দাবিকৃত চাঁদা না দিলেই সকলের সামনে জামা কাপড় খুলে ফেলে, গায়ে হাত দেয় হিজরারা এক জোট হয়ে মারধর করতে থাকে লোকজনকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কুমিল্লার হিজরারা চাঁদাবাজি ও যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পরেছে। কেউ কেউ জড়িয়ে পড়েছে নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসায়।
কুমিল্লায় হিজরারা গঠন করেছে হিজরা বাহিনী। বিভিন্ন সময়ে তাদের হামলায় আহত হয়েছেন অনেকে। হিজরাদের অত্যাচরে অতিষ্ঠ হয়ে কোন কোন জায়গায় আটক করে পুলিশে দেয়া হচ্ছে হিজরাদের।